Skip to main content

সূরা আন নাবা এর পরিচয়:

By দৈনিক তাফসীর No Comments

সূরা আন নাবা এর পরিচয়:

সূরার নাম: আরবী ভাষায় প্রচলিত একটি নিয়ম হলো: একটি বড় বিষয় বা জিনিসের নাম রাখা হয় তার মধ্যে অন্তর্ভূক্ত একটি ছোট অংশ দিয়ে। পবিত্র কোরআনের সূরার নামকরণের ক্ষেত্রেও তার বিপরীত হয়নি। এজন্য বিভিন্ন তাফসীর গ্রন্থ থেকে অত্র সূরার এমন পাঁচটি নাম পাওয়া যায়, যা সূরার মধ্যেই নিহিত রয়েছে। নামগুলো হলো:
(ক) ‘সূরা আম্মা’ সূরাটি অত্র শব্দ দিয়ে শুরু হওয়ার কারণে এ নামে নামকরণ করা হয়েছে।
(খ) ‘সূরা আন নাবা’, শব্দটি সূরার দ্বিতীয় নাম্বার আয়াতে উল্লেখিত হয়েছে।
(গ) ‘সূরা আম্মা ইয়াতাসাআলূন’, বাক্যটি সূরার প্রথম আয়াত।
(ঘ) ‘সূরা আল-মুՙসিরাত’, শব্দটি সূরার ১৪ নাম্বার আয়াতে বর্ণিত হয়েছে।
(ঙ) ‘সূরা তাসাউল’, শব্দটি সূরার প্রথম আয়াতে বর্ণিত হয়েছে। (রুহুল মায়ানী, আলূসী: ১৫/২০১, তাফসীর মাওজূয়ী, মোস্তফা মুসলিম: ১০/১) ।

আলোচ্যবিষয়: পুনরুত্থান দিবস ও তা সংগঠিত হওয়ার প্রমাণ।

সূরার ফযিলত:
(ক) কিয়ামুল লাইলে ‘সূরা আন নাবা’ তেলাওয়াত করা, রাসূলুল্লাহ (সা.) কিয়ামুল লাইলে এ সূরা পাঠ করতেন (মাওসূয়াত ফাযায়িল সূয়ার, তারহুনী: ২./১১০) । আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রা.) বলেন:
“أنَّ النبي – صلَّى الله عليه وسلم – كان يقرأ النَّظائرَ السُورتين في رَكْعةٍ، (الرحمن، والنجم) في ركعة، و (اقتربت، والحاقة) في ركعة، و (الطور، والذاريات) في ركعة، و (إذا وقَعَت، ونون) في ركعة، و (سأل سائل، والنازعات) في ركعة، و (وَيْلٌ للمطففين، وعبس) في ركعة، و (المدَّثر، والمزمِّل) في ركعة، و (هل أتى، ولا أقسمُ بيوم القيامة) في ركعة، و (عمَ يتساءلون، والمرسلات) في ركعة، و (الدخان، وإذا الشمسُ كورت) في ركعة” (سنن أبو داود: ১৩৯৬).
অর্থাৎ: “রাসূলুল্লাহ (সা.) এক রাকয়াতে সাদৃশ্যপূর্ণ দুইটি সূরা তেলাওয়াত করতেন। প্রথম রাকয়াতে সূরা রহমান ও নায্ম, পরের রাকয়াতে সূরা ক্বমার ও হাক্ক¦াহ, পরের রাকয়াতে সূরা ত‚র ও যারিয়াাত, পরের রাকয়াতে সূরা ওয়াক্বিয়া ও নূন, পরের রাকয়াতে সূরা মায়ারিজ ও নাাযিয়াাত, পরের রাকয়াতে সূরা মুতাফফিফীন ও আবাসা, পরের রাকায়াতে সূরা মুদ্দাস্সির ও মুয্যাম্মিল, পরের রাকয়াতে দাহ্র ও কিয়ামাহ, পরের রাকায়াতে সূরা নাবা ও মুরসালাত এবং শেষের রাকাতে সূরা দুখান ও তকভীর” (সুনান আবি দাউদ: ১৩৯৬, হাদীসটি সহীহ) ।
(খ) অত্র সূরাটি মুফাস্সালাত এর অন্তভ‚ক্ত, আর মুফাস্সালাত সূরাগুলোকে কোরআনের অন্তর বলা হয়। যেমন: ইবনু আব্বাস (রা.) বলেন:
(إِنَّ لِكُلِّ شَيْءٍ سَنَامًا، وَإِنَّ سَنَامَ الْقُرْآنِ سُورَةُ الْبَقَرَةِ، وَإِنَّ لِكُلِّ شَيْءٍ لُبَابًا، وَإِنَّ لُبَابَ الْقُرْآنِ الْمُفَصَّلُ) [سنن الدارمي: ৩৪২০].
অর্থাৎ: “প্রত্যেক জিনিসের মস্তিষ্ক আছে, কোরআনের মস্তিষ্ক হলো: সূরা বাকারা; এবং প্রত্যেক জিনিসের অন্তর আছে, আর কোরআনের অন্তর হলো: মুফাস্সাল সূরাগুলো”।
(সুনানে দারিমী, ৩৪২০) ।
আরো একটি হাদীসে এসেছে, যেখানে বলা হয়েছে মুফাস্সালাত সূরাগুলো ইতিপূর্বে কোন নবী-রাসূলকে প্রদান করা হয়নি। যেমন: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
(لَقَدْ أُعْطِيتُ السَّبْعَ الطِّوَالَ مَكَانَ التَّوْرَاةَ، وَالْمَثَانِي مَكَانَ الْإِنْجِيلِ، وَفُضِّلْتُ بِالْمُفَصَّلِ) [مسند الشامين: ২৭৩৪].
অর্থাৎ: “আমাকে তাওরাত এর স্থলাভিষিক্ত সাতটি লম্বা সূরা, ইনজীল এর স্থলাভিষিক্ত মাসানী সূরাগুলো দেওয়া হয়েছে এবং আমাকে অতিরিক্ত প্রদান করা হয়েছে মুফাস্সাল সূরাগুলো, যা পূর্বের কোন নবী-রাসূলকে দেওয়া হয়নি”। (মুসনাদে শামী, ২৭৩৪) ।

হাদীসে মুফাস্সালাত সূরা দ্বারা উদ্দেশ্য হলো: সূরা ক্বফ থেকে সূরা নাস পর্যন্ত সূরাগুলো।

মুসহাফে সূরাটির অবস্থান: ৭৮তম সূরা।

অবতীর্ণের দৃষ্টিতে সূরাটির অবস্থান: ৭৯তম সূরা, যা ‘সূরা মায়ারেয’ এর পরে এবং ‘সূরা নাযিয়াত’ এর পূর্বে অবতীর্ণ হয়েছে।

অবতীর্ণের স্থান: সকল তাফসীরকারক একমত যে, সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে, সতরাং তা সূরা মাক্কিয়্যাহ। (বিতাকাত আল-তারীফ, ২৭৪) ।

আয়াত সংখ্যা: ৪০টি।

অবতীর্ণের প্রেক্ষাপট: এ সূরাটির একটি অবতীর্ণের প্রেক্ষাপট পাওয়া যায়।

সূরা নাযিয়াত এর (৩৪-৪৬) আয়াতের তাফসীর, আলোচ্য বিষয়: কিয়ামতের দিন মানুষের দুই দলে বিভক্তি।

By দৈনিক তাফসীর No Comments

সূরা নাযিয়াত এর (৪৩-৪৬) আয়াত অবতীর্ণের প্রেক্ষাপট:
আয়েশা সিদ্দীকা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সা.) কে বার বার কিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে আল্লাহ তায়ালা অত্র সূরার শেষের চার আয়াত অবতীর্ণ করে জানিয়ে দেন যে কিয়ামত কখন হবে সে সম্পর্কে কেবল আল্লাহ তায়ালাই জানেন।
ইবনু আব্বাস (রা.) বলেন: মক্কার মুশরিকরা রাসূলুল্লাহকে উপহাস পূর্বক জিজ্ঞাসা করতো তুমি শুধু কিয়ামত কিয়ামত করো, তাহলে বলো: কখন তোমার কিয়ামত সংগঠিত হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ তায়ালা অত্র সূরার (৪৩-৪৬) আয়াত অবতীর্ণ করেছেন।
ইবনু জারীর আল-তবারী (র.) তার তাফসীর গ্রন্থে তারিক ইবনু শিহাব (র.) এর সনদে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) কিয়মতের কথা বেশী বেশী স্মরণ করার কারণে আল্লাহ তায়ালা (৪৩-৪৪) নাম্বার আয়াত অবতীর্ণ করেছেন। (লুবাব আল-নুক‚ল, সুয়ূতী: ৩৫২-৩৫৩) ।

সূরা নাযিয়াত এর (৩৪-৪৬) আয়াতের শিক্ষা:
১। অত্র সূরার (৩৪-৩৬) আয়াতে হাশরের ময়দানের দুইটি চিত্র তুলে ধরা হয়েছে:
(ক) মানুষের সামনে যখন তাদের দুনিয়ার কৃতকর্ম পেশ করা হবে, তখন তারা তাদের কৃতকর্মগুলোকে চিনতে ও বুঝতে পারবে।
(খ) কাফির ও ঈমানদার সকলের সামনে জাহান্নামকে উপস্থাপন করা হবে। কাফিররা জাহান্নামের মধ্যে যত ধরণের শাস্তি আছে দেখতে পাবে এবং মুমিনরা জাহান্নামকে দেখে তাদেরকে যে নেয়ামত প্রদান করা হয়েছে তার মূল্য বুঝতে পারবে। (তাফসীর আল মুনীর: ৩০/৫৪) ।
২। অত্র সূরার (৩৭-৩৯) আয়াতে হাশরের ময়দানে বিচারের পর জাহান্নামী হওয়ার দুইটি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে:
(ক) আল্লাহর বিধানের সীমালঙ্গন করা।
(খ) দুনিয়াকে আখেরাতের উপর প্রাধান্য দিয়ে দুনিয়া ভিত্তিক জীবনযাপন করা।
৩। অত্র সূরার (৪০-৪২) আয়াতে হাশরের ময়দানে বিচারের পর জান্নাতী হওয়ার দুইটি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে:
(ক) কিয়ামতের দিনে আল্লাহর সামনে দাড়ানোকে ভয় করা।
(খ) কুপ্রবৃত্তি থেকে নিজের আত্মাকে পুতপবিত্র রাখা।
৪। অত্র সূরার (৪৩-৪৬) আয়াতে কিয়ামত সংশ্লিষ্ট চারটি বিষয়ে কথা বলা হয়েছে:
(ক) কিয়ামতের প্রস্তুতির জন্য তা কখন সংগঠিত হবে তা জানার দরকার হয় না।
(খ) কিয়ামত কখন সংগঠিত হবে, তা কেবল আল্লাহ তায়ালা জানেন।
(গ) যারা কিয়ামতের দিনকে ভয় পাবে কেবল তাদেরকে ইসলামের দিকে দাওয়াত দেওয়া।
(ঘ) মানুষ যখন কিয়ামতের ভয়াবহ অবস্থা প্রত্যক্ষ করবে, তখন তাদের কাছে মনে হবে দুনিয়াতে তারা এক সকাল কিংবা এক সন্ধ্যা অবস্থান করেছিল।
৫। অত্র সূরার ৪৬নং আয়াতের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, আখেরাতের জীবনের তুলনায় দুনিয়ার জীবন খুবই স্বল্প সময়ের। এ সম্পর্কে সূরা আহক্বাফ এর ৩৫ নং আয়াতে বলা হয়েছে:
فَاصْبِرْ كَمَا صَبَرَ أُولُو الْعَزْمِ مِنَ الرُّسُلِ وَلَا تَسْتَعْجِلْ لَهُمْ كَأَنَّهُمْ يَوْمَ يَرَوْنَ مَا يُوعَدُونَ لَمْ يَلْبَثُوا إِلَّا سَاعَةً مِنْ نَهَارٍ بَلَاغٌ فَهَلْ يُهْلَكُ إِلَّا الْقَوْمُ الْفَاسِقُونَ (৩৫) [سورة الأحقاف: ৩৫].
অর্থাৎ: “অতঃপর (হে নবী!) তুমি ধৈর্য ধারণ করো যেমন করে ধৈর্য ধারণ করেছিলো আগের যুগের রাসূলগণ, তাদের ব্যাপারে তুমি তাড়াহুড়ো করো না; যেদিন সত্যিই তারা সেই আযাব নিজেদের সামনে দেখতে পাবে, যার ওয়াদা তাদের কাছে করা হয়েছিলো, তখন তাদের অবস্থা হবে এমন, যেন তারা দুনিয়ায় দিনের সামান্য কিছু মুহূর্ত অতিবাহিত করে এসেছে; মূলত এটা একটি ঘোষণামাত্র, এ ঘোষণা যারা প্রত্যাখ্যান করেছে, কেবল তারাই সেদিন ধ্বংস হবে” (সূরা আহক্বাফ: ৩৫) ।
৬। অত্র সূরার ৩৫নং আয়াতের অনুরুপ একটি আয়াত সূরা ফজর এর ২৩নং আয়াত এবং সূরা মুযাদালাহ এর ৬নং আয়াতে এসেছে এবং (৪২-৪৪) নাম্বার আয়াতের অনুরুপ আয়াত সূরা আরাফ এর ১৮৭ এবং সূরা লোক্বমান এর ৩৪নং আয়াতে এসেছে।

আয়াতাবলীর আমল:
(ক) কিয়ামতের ভয়াবহতার কথা মনে করে আখেরাত ভিত্তিক জীবনযাপন করা।
(খ) ইসলামের সীমরেখা অতিক্রম না করা।

রাসূলুল্লাহ (সা.) এর পরিচয়:

By মুসলিম হিসেবে যা জানতেই হবে No Comments

তিনি হলেন: মোহাম্মদ ইবনু আব্দিল্লাহ ইবনু আব্দিল মুত্তালিব ইবনু হাশিম। আর হাশিম হলেন কোরাইশ বংশের এবং কোরাইশ হলো আরবের এবং আরব হলো ইসমাঈল ইবনু ইব্রাহীম (আ.) এর বংশের।

তিনি ৬৩ বছর জীবিত ছিলেন। নবুয়াত প্রাপ্তির পূর্বে ৪০ বছর এবং নবুয়াত প্রাপ্তির পর ২৩ বছর। তিনি মক্কার অধিবাসী ছিলেন।

আল্লাহ তায়ালা তাকে শিরক থেকে ভীতিপ্রদর্শন এবং তাওহীদ বা একত্ববাদের দিকে আহবান করার জন্য বিশ্ববাসীর কাছে  প্রেরণ করেছেন। তিনি সর্বশেষ নবী ও রাসূল। তার পরে আর কোন নবী ও রাসূল আসবেন না।

বৈঠক শেষ করার দোয়া:

By আজকের দোয়া No Comments

বৈঠক শেষে নিচের দোয়া পাঠ করা:

“سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ أَشْهَدُ أَلَّا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْكَ”

উচ্চারণ: “সুবহানাকা আল্লাহুম্মা, ওয়া বিহামদিকা আশহাদু আললাইলাহা ইল্লা আনতা আস্তাগফিরুকা ওয়া আতুবু ইলাইক” ।

অর্থাৎ: “হে আল্লাহ আপনি পুতপবিত্র এবং আপনার প্রশংসার সাথে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আপনি ছাড়া কোন সত্য মা’বুদ নেই, আপনার কাছে ক্ষমা প্রার্থণা করছি এবং আপনার কাছে তাওবা করছি”।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: বৈঠক শেষে এই দোয়াটি পাঠ করলে বৈঠকে সংগঠিত সকল ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করে দেওয়া হয়। (সুনান আল-তিরমিযী: ৩৪৩৩) । শায়খ আলবানী (র.) হাদিসটিকে ‘সহীহ‘ বলেছেন।

Close Menu
error: Content is protected !!