Skip to main content

সূরাতু আলে ইমরানের (৮৪-৮৫) আয়াতদ্বয়ের তাফসীর, আলোচ্যবিষয়: সকল নবী-রাসূলকে মেনে নেয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ।

﴿قُلْ آمَنَّا بِاللَّهِ وَمَا أُنْزِلَ عَلَيْنَا وَمَا أُنْزِلَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ وَإِسْحَاقَ وَيَعْقُوبَ وَالْأَسْبَاطِ وَمَا أُوتِيَ مُوسَى وَعِيسَى وَالنَّبِيُّونَ مِنْ رَبِّهِمْ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِنْهُمْ وَنَحْنُ لَهُ مُسْلِمُونَ (84) وَمَنْ يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَنْ يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ (85)﴾ [سورة آل عمران: 84-85]

 

আয়াতদ্বয়ের আলোচ্যবিষয়: সকল নবী-রাসূলকে মেনে নেয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ।

আয়াতদ্বয়ের সরল অনুবাদ:
৮৪। হে আল্লাহর নবী! তোমার উম্মত যেন বলে: আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর প্রতি, যা অবতীর্ণ করা হয়েছে আমাদের প্রতি, যা অবতীর্ণ করা হয়েছে ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়ক‚ব, ও তাদের বংশধরদের প্রতি এবং তাদের রবের পক্ষ থেকে যা প্রদান করা হয়েছে মূসা, ঈসা ও অন্যান্য নবীগণকে, আমরা তাদের কারো মধ্যে পার্থক্য করি না এবং আমরা তাঁরই প্রতি আত্মসমার্পণকারী।
৮৫। আর যে ব্যক্তি ইসলামকে বাদ দিয়ে অন্য কোন ধর্ম তালাশ করে, তা কখনও তার পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হবে না এবং সে আখেরাতে খতিগ্রস্তদের অন্তর্ভূক্ত হবে।

আয়াতদ্বয়ের ভাবার্থ:
ইহুদী-খৃষ্টানরা মোহাম্মদ (সা.) এবং কোরআনকে অস্বীকার করার মাধ্যমে কাফির হয়ে গেছে, তাদেরকে তিরস্কার করার পর এবার আল্লাহ তায়ালা রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তার উম্মতকে শিক্ষা দিচ্ছেন যে ইহুদী-খৃষ্টানরা যাই বলুক না কেন, মুসলমানরা যেন বলে: আমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি, আমাদের প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তার প্রতি ঈমান এনেছি এবং ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব ও তার বংশধরদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে, তার প্রতি ঈমান এনেছি। এমনকি ইহুদী-খৃষ্টানদের নবী মূসা ও ঈসাকে (আ.) এবং অন্যান্য সকল নবীদেরকে যা দেওয়া হয়েছে তার প্রতিও আমরা ঈমান এনেছি। আমরা তাদের কারো মধ্যে পার্থক্য করি না, কারণ আল্লাহর জন্য আমরা নিজেদেরকে পুরোপুরি উৎসর্গ করে দিয়েছি। সুতরাং আমাদের জন্য তাঁর নির্দেশের বাহিরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই।

মোহাম্মদ (সা.) রাসূল হিসেবে প্রেরিত হবার পর যে ব্যক্তি ইসলামকে বাদ দিয়ে অন্য কোন ধর্মকে তালাশ করবে, আল্লাহ তায়ালার কাছে তা কখনও গ্রহণযোগ্য হবে না এবং সে আখেরাতে জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (আইসার আল-তাফাসীর: ১/৩৪০-৩৪১, আল-তাফসীর আল-মুয়াস্সার: ১/৬১, আল-মোন্তাখাব: ১/৯৯) ।

আয়াতদ্বয়ের বিরল শব্দের ব্যাখ্যা:
﴿وَالْأَسْبَاطِ﴾ ‘এবং বংশধর’, আয়াতাংশে ‘আল-আসবাত’ শব্দটি আরবী, ‘সাবত’ এর বহুবচন। এর অর্থ হলো: গোত্র। আয়াতে ইয়াকুবের (আ.) বার পুত্র এবং তাদের বংশধরকে বুঝানো হয়েছে। এখানে বিশেষভাবে তাদেরকে উল্লেখ করার কারণ হলো: ইহুদী-খৃষ্টানরা তাদের নবুয়াত ও কিতাবকে বিশ্বাস করে। (তাফসীর আল-মারাগী: ৩/২০২) ।

﴿الْإِسْلَامِ﴾ ‘ইসলাম’, আয়াতে ইসলাম দ্বারা উদ্দেশ্য হলো: মানবজাতির জন্য আল্লাহ তায়ালার নির্বাচিত ধর্ম, যা চারটি বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে:
(ক) আল্লাহর একাত্ববাদে বিশ্বাস করা।
(খ) ইখলাসের সাথে তাঁর ইবাদত-বন্দেগী করা।
(গ) তিনি তাঁর নবী-রাসূলদের মাধ্যমে যা নির্দেশ দিয়েছেন তার প্রতি পরিপূর্ণ আনুগত্য পোষণ করা।
(ঘ) সর্বশেষ নবী মোহাম্মদের (সা.) প্রতি বিশ্বাস ও আনুগত্য পোষণ করা। (তাফসীর ইবনু কাসীর: ২/৭০, তাফসীর আল-মারাগী: ৩/২০২-২০৩, আল-তাফসীর আল-মোয়াসসার: ১/৬১) ।

আয়াতদ্বয়ের সাথে পূর্বের আয়াতাবলীর সম্পর্ক:
পূর্বের আয়াতাবলী অর্থাৎ (৮১-৮৩) নাম্বার আয়াতে সকল নবী-রাসূল এবং উম্মত যেন মোহাম্মদ (সা.) কে নবী ও রাসূল হিসেবে গ্রহণ করে তার আলোচনা করা হয়েছে। আর উল্লেখিত আয়াতদ্বয়ে মোহাম্মদ (সা.) এবং তার উম্মত সকল নবী-রাসূল ও তাদের প্রতি অবতীর্ণ হওয়া আসমানী কিতাবের উপর এমনকি মূসা ও ঈসা (আ.) এবং তাদের প্রতি অবতীর্ণ হওয়া তাওরাত-ইনজীলের প্রতিও বিশ্বাস স্থাপন করে থাকে, এ বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সুতরাং উল্লেখিত আয়াতদ্বয়ের সাথে পূর্বের আয়াতাবলীর সম্পর্ক স্পষ্ট। (তাফসীর আল-মুনীর, ওয়াহাবা জুহাইলী: ৩/২৮২) ।

(৮৫) নাম্বার আয়াত অবতীর্ণের প্রেক্ষাপট:
ইমাম মুজাহিদ (র.) বলেন: অত্র আয়াত হাল্লাস ইবনু সুয়াইদ (রা.) এর ভাই আনসারী সাহাবী হারিস ইবনু সুয়াইদ (রা.) সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। বিস্তারিত ঘটনা হলো: হারিস ইবনু সুয়াইদ তার ১২(বার) জন সঙ্গী-সাথী সহ ইসলাম থেকে বেড়িয়ে গিয়ে মক্কার কাফিরদের সাথে সাক্ষাত করে। তখন তাকে সতর্ক করার জন্য আল্লাহ তায়ালা অত্র আয়াত অবতীর্ণ করেন। এ আয়াত অবতীর্ণের পরে হাল্লাস (রা.) তার ভাইকে তাওবা করে পুনরায় ইসলামে ফিরে আসতে বলেন। আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা.) বলেন: হারিস অত্র আয়াত অবতীর্ণের পর পুনরায় ইসলামে ফিরে এসেছিলেন। (তাফসীর আল-মুনীর: ৩/২৮৪) ।

আয়াতদ্বয়ের শিক্ষা:
১। ৮৪ নাম্বার আয়াত থেকে বুঝা যায় যে,
(ক) ইসলামী শরীয়াহ চিরস্থায়ী হওয়ার পিছনে দুইটি বড় কারণ রয়েছে:
(র) সমস্ত নবী-রাসূল ও তাদের কিতাবের প্রতি সর্বাঙ্গীন ও পূর্ণ বিশ্বাস। ইসলাম সকল নবী এবং তাদের কাছে পাঠানো কিতাবের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে নির্দেশ প্রদান করেছে। এজন্য মুসলমানগণ শুধু শেষ নবী মোহাম্মদ রাসূলুল্লাহ (সা.) এর প্রতি নয়, বরং সকল নবী-রাসূল যেমন: ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব, মূসা এবং ঈসা (আ.) ইত্যাদির প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে থাকে। তারা সকল কিতাব যেমন: তাওরাত, ইনজীল, যাবুর ইত্যাদির প্রতি বিশ্বাস স্থাপন এবং সম্মান করে থাকে। কারণ, এ সবকিছু আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে।
(রর) আল্লাহর অস্তিত্ব ও তার একত্ববাদে বিশ্বাস রাখা, তাঁর আনুগত্যে আত্মসমর্পণ করা এবং তাঁর নির্ধারিত পথ তথা শরীয়তের প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ থাকা। ইসলাম আল্লাহর অস্তিত্ব ও তাঁর একত্ববাদের প্রতি বিশ্বাস করতে বলে। মুসলমানরা আল্লাহর আদেশ মানে, তাঁর পথ অনুসরণ করে এবং তিনি যে শরিয়ত দিয়েছেন তা মেনে চলে। এ নিয়ম সকল নবী-রাসূল মেনে চলেছেন এবং আল্লাহ এটাকেই মানবজাতির জন্য সঠিক পথ হিসেবে বেছে নিয়েছেন। এ পথে চললে মানুষ পরকালে মুক্তি পাবে। (তাফসীর আল-মুনীর, জুহাইলী: ৩/২৮৬) ।
(খ) কার ঈমান অশুদ্ধ, তা বুঝার জন্য আল্লাহ তায়ালা দুইটি ফর্মূলা দিয়েছেন:
(র) কোন মানুষের ঈমান শুদ্ধ নয় যদি সে কিছু নবী-রাসূলের প্রতি ঈমান আনে এবং কিছু নবী-রাসূলকে অস্বীকার করে।
(রর) যদি কেউ আল্লাহ তায়ালা রাসূলদের উপর যে সকল আসমানী কিতাব অবতীর্ণ করেছেন, তার কিছু অংশের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে আর কিছু অংশকে অস্বীকার করে, তাহলে তার ঈমানও শুদ্ধ নয়। (আইসার আল-তাফাসীর, জাযায়েরী: ৩৪১) ।
২। ৮৫নং আয়াত থেকে পরিলক্ষিত হয় যে, কোন ব্যক্তি যদি উপরোল্লেখিত পথ তথা মোহাম্মদ রাসূলুল্লাহর (সা.) অনুসৃত ধর্মকে ছেড়ে অন্য কোন পথ অনুসরণ করে, তাহলে আল্লাহ তায়ালা তা গ্রহণ করবেন না এবং তার জীবনের কোন কর্ম কাজে আসবে না, শেষ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে জাহান্নামে চলে যাবে। (তাফসীর আল-মুনীর, জুহাইলী: ৩/২৮৬) ।
৩। সকল নবী-রাসূল একটি ধর্মের অনুসারী ছিলেন, আর তা হলো: ইসলাম। এ ব্যাপারে কোরআনের অনেক আয়াত এবং রাসূলুল্লাহর (সা.) বাণী রয়েছে:

নূহ (আ.) মুসলিম ছিলেন, এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা সূরাতু ইউনুস এ বলেছেন:
﴿فَإِنْ تَوَلَّيْتُمْ فَمَا سَأَلْتُكُمْ مِنْ أَجْرٍ إِنْ أَجْرِيَ إِلَّا عَلَى اللَّهِ وَأُمِرْتُ أَنْ أَكُونَ مِنَ الْمُسْلِمِينَ﴾ [سورة يونس: ৭২].
অর্থাৎ: “অতএব তোমরা যদি মুখ ফিরিয়ে নাও, তাহলে জেনে রেখ তোমাদের কাছে দাওয়াতের বিনিময়ে কিছু চাই না, তা কেবল আল্লাহর কাছেই চাই। আর আমিতো মুসলিম হওয়ার জন্য আদিষ্ট হয়েছি” (সূরাতু ইউনুস: ৭২) ।

ইব্রাহীম (আ.) মুসলিম ছিলেন, এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা সূরাতু আলে ইমরানে বলেছেন:
﴿مَا كَانَ إِبْرَاهِيمُ يَهُودِيًّا وَلَا نَصْرَانِيًّا وَلَكِنْ كَانَ حَنِيفًا مُسْلِمًا وَمَا كَانَ مِنَ الْمُشْرِكِينَ﴾ [سورة آل عمران: ৬৭].
অর্থাৎ: “ইব্রাহীম (আ.) ইহুদী-খৃষ্টান ছিলেন না, বরং তিনি ছিলেন একজন একনিষ্ঠ মুসলিম। এমনকি তিনি মুশরিকদেরও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না” (সূরাতু আলে ইমরান: ৬৭) ।

ইয়াকুব (আ.) মুসলিম ছিলেন, এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন:
﴿وَوَصَّى بِهَا إِبْرَاهِيمُ بَنِيهِ وَيَعْقُوبُ يَا بَنِيَّ إِنَّ اللَّهَ اصْطَفَى لَكُمُ الدِّينَ فَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنْتُمْ مُسْلِمُونَ﴾ [سورة البقرة: ১৩২].
অর্থাৎ: “আর ইব্রাহীম (আ.) তার সন্তানদেরকে ইসলাম গ্রহণের অসিয়ত করেছেন এবং ইয়াকুব (আ.) তার বংশধরকে এ বলে অসিয়ত করেছেন যে, হে আমার সন্তানেরা, নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা তোমাদের জন্য এ দীনকে চয়ন করেছেন। সুতরাং তোমরা মুসলিম না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না” (সূরাতু আল-বাক্বারা: ১৩২) ।

ইউসূফ (আ.) মুসলিম ছিলেন, এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন:
﴿أَنْتَ وَلِيِّي فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ تَوَفَّنِي مُسْلِمًا وَأَلْحِقْنِي بِالصَّالِحِينَ﴾ [سورة يوسف: ১০১].
অর্থাৎ: “ইউসুফ (আ.) বললেন: আপনি দুনিয়া ও আখেরাতে আমার অভিভাবক, আমাকে মুসলিম অবস্থায় মৃত্যু দিয়েন এবং সৎপরায়ণদের সাথে সাক্ষাত করিয়ে দিয়েন” (সূরাতু ইউসুফ: ১০১) ।

মূসা (আ.) মুসলিম ছিলেন, এ সম্পর্কে কোরআনে এসেছে:
﴿وَقَالَ مُوسَى يَا قَوْمِ إِنْ كُنْتُمْ آمَنْتُمْ بِاللَّهِ فَعَلَيْهِ تَوَكَّلُوا إِنْ كُنْتُمْ مُسْلِمِينَ﴾ [سورة يونس: ৮৪].
অর্থাৎ: “এবং মূসা (আ.) বললেন: হে আমার জাতি, তোমরা যদি আল্লাহর প্রতি ঈমান এনে থাকো, তাহলে তাঁর উপর ভরসা করা উচিৎ, যদি তোমরা প্রকৃত অর্থে মুসলিম হয়ে থাকো” (সূরা ইউনুস: ৮৪) ।

সোলাইমানও (আ.) মুসলিম ছিলেন, তিনি রাণী ‘বিলকিস’ কে ইসলামের দিকে দাওয়াত দিয়েছিলেন এবং তিনি কবুল করেছিলেন। এ সম্পর্কে কোরআনে এসেছে:
﴿قَالَتْ رَبِّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي وَأَسْلَمْتُ مَعَ سُلَيْمَانَ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ﴾ [سورة النمل: ৪৪].
অর্থাৎ: “সে বললো: হে আমার রব! নিশ্চয় আমি নিজের উপর অত্যাচার করেছি এবং আমি সোলাইমানের সাথে বিশ্বসমূহের প্রতিপালক আল্লাহর কাছে আত্মসমার্পণ করলাম” (সূরাতু আন-নামল: ৪৪) ।

ইব্রাহীম (আ.) এবং তার পুত্র ইয়াকুব (আ.) নিজেরাই শুধু মুসলিম ছিলেন না, বরং তারা তাদের বংশধরকে মুসলিম হওয়ার জন্য অসিয়ত করে গিয়েছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা সূরাতু আল-বাক্বারার ১৩২নং আয়াতে বলেছেন:
﴿وَوَصَّى بِهَا إِبْرَاهِيمُ بَنِيهِ وَيَعْقُوبُ يَا بَنِيَّ إِنَّ اللَّهَ اصْطَفَى لَكُمُ الدِّينَ فَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنْتُمْ مُسْلِمُونَ﴾ [سورة البقرة: ১৩২].
অর্থাৎ: “আর ইব্রাহীম (আ.) তার সন্তানদেরকে ইসলাম গ্রহণের অসিয়ত করেছেন এবং ইয়াকুব (আ.) তার বংশধরকে এ বলে অসিয়ত করেছেন যে, হে আমার সন্তানেরা, নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা তোমাদের জন্য এ দীনকে চয়ন করেছেন। সুতরাং তোমরা মুসলিম না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না” (সূরাতু আল-বাক্বারা: ১৩২) । সুতরাং বনী ইসরাঈল এবং তাদের মধ্যে যত নবী-রাসূল আগমণ করেছেন সকলেই এ অসিয়তের আওতায় পড়ে। অর্থাৎ: ইহুদী-খৃষ্টান এবং তাদের নবী ঈসা, মূসা, সোলায়মান, দাউদ (আ.) ইত্যাদি সকলকে তাদের পিতা ইয়াকুব (আ.) মুসলিম হওয়ার জন্য অসিয়ত করে গিয়েছেন। (আল্লাহই ভালো জানেন) ।

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“الْأَنْبِيَاءُ إِخْوَةٌ مِنْ عَلَّاتٍ، وَأُمَّهَاتُهُمْ شَتَّى، وَدِينُهُمْ وَاحِدٌ، فَلَيْسَ بَيْنَنَا نَبِيٌّ” (صحيح مسلم: ২৩৬৫).
অর্থাৎ: ভিন্ন ভিন্ন মায়ের সন্তান হওয়া সত্বেও সকল নবী-রাসূলগণ ভাইয়ের মত এবং তাদের ধর্ম এক। আমার এবং ঈসার (আ.) মধ্যে কোন নবী নেই। (সহীহ মুসলিম: ২৩৬৫) ।

আয়াতদ্বয়ের আমল:
১। সকল নবী-রাসূলদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা এবং তাদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। বিশেষ করে ইহুদী-খৃষ্টানদের উচিৎ মোহাম্মদ (সা.) সহ সকল নবী-রাসূলদেরকে সম্মান দেখানো এবং তাদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা।
২। ইসলামকে বাদ দিয়ে অন্য কোন ধর্মকে তালাশ না করা।

Leave a Reply

error: Content is protected !!